গ্যারান্টি-সহ - 15 বছর - বোটক্স ছাড়াই!
হামিদা বানু
মাসের সেরা কাহিনী: "আমার সৌন্দর্যের কাহিনী"
নমস্কার আমার প্রিয় পাঠকেরা। আজ আমি কীভাবে আমার সৌন্দর্যকে অনেক-অনেক দূরে খুঁজে পেতে সক্ষম হয়েছিলাম, এবং কীভাবে আমি সেটাকে বাড়ি অবধি নিয়ে আসতে পেরেছিলাম সেই কাহিনী শোনাব।
প্রথম কথা হল, আগে নিজের পরিচয়টা দিই। আমি হামিদা বানু, বয়স 47 বছর, বর্তমানে চট্টগ্রামে বসবাসরত।
এটা আমার কাহিনী একদিন আমি ঘুম থেকে উঠে যখন আয়নার দিকে তাকালাম, আমার চোখ ঠেলে জল বেরিয়ে এল।
আমার কলাপটা মোটা-মোটা ভাঁজ এবং সূক্ষ্ম রেখায় পরিপূর্ণ ছিল- ওই দিনটা ছিল ঠাণ্ডা শরতের সকাল, কিন্তু আমার একটু উষ্ণতা আর আলোর আকাঙ্খা হচ্ছিল। কোন এক কারণে অতীতে এক মহিলার ব্যাপারে পড়া একটা গল্পের কথা আমার মনে পড়ে গেল, যিনি তিউনিশিয়ার এক স্পা-তে গিয়ে নিজের মুখমণ্ডলকে পুনরুজ্জীবীত করতে সক্ষম হয়েছিলেন। প্রাক্তন এই ফরাসী উপনিবেশটি বিশেষজ্ঞ প্রসাধনবিদে ভরা ছিল, যারা দুর্দান্ত সব স্থানীয় সামগ্রী ব্যবহার করে মানুষকে সাহায্য করতেন। এই বিশেষজ্ঞেরা বাংলাদেশের সৌন্দর্যবিদদের থেকে 2-3 গুণ শস্তায় কাজ করেন। আমার মনে হয় এই কারণে গোটা বিশ্বের লোকেদের মধ্যে তিউনিশিয়ায় যাবার হিরিক এত বেশি, বাংলাদেশের লোকেদের মধ্যেও :-)
"আমার তো সুন্দর হবার অধিকার আছে, তাই না?!" - এই কথাটা মাথায় রেখে, আমি তিউনিশিয়ায় ভ্রমণের ব্যাপারে চারিদিকে কথা বলতে শুরু করলাম। অতি শীঘ্রই আমি এক পর্যটন সংস্থার 50% ছাড়ে তিউনিশিয়া ভ্রমণের কথায় প্ররোচিত হয়ে পড়লাম। আসল কথায় আসি, 2 দিন পরেই আমি তিউনিশিয়ার শান্তিপূর্ণ রিজর্ট শহর হ্যামামেটের বায়ো আজুর স্পা সেন্টার আমার বুকিং করে ফেললাম। আমি সেখানে পৌঁছানোর সাথে-সাথেই স্থানীয় জাদুকরেরা তাদের কাজ শুরু করে দিলেন। অ্যালগি আর কাদার পরৎ লাগানো বা হাইড্রো মাসাজ টিউব ইত্যাদির কাহিনী বলে আমি আপনাদের সময় নষ্ট করতে চাই না। সেটা আমার বক্তব্যের বিষয় নয়। আমি আপনাদের আমার মুখের ব্যাপারে তারা কী করলেন সেটাই জানাতে চাই।
কোর্সটা 12 দিনের জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। আমি যাতে পরবর্তীকালে আমার মুখের পরিবর্তন চাক্ষুস করতে পারি সে জন্য নিজের মুখের ছবি তুলে রেখেছিলাম। তাহলে, কাহিনীতে ফিরি, আমি এক বিখ্যাত প্রসাধনবিদের বিলাসবহুল চেয়ারে বসেছিলাম, ট্রিটমেন্টটা উপভোগ করছিলাম - সেটা অত্যন্ত আনন্দের ছিল। হালকা মনকে শান্ত করা সঙ্গীত বাজছিল, মশালাদার সুগন্ধ ছিল যা সেখানকার বাতাসকে সুরভিত করে রেখেছিল, আর ছিল অনন্য এক বড়ি দিয়ে দারুণ মাসাজ। with a unique cream. গোটা প্রক্রিয়াটর জন্য 15-20 সময় লেগেছিল। এটা 12 দিন ধরে চলেছিল। আর তার ফলাফল কী হয়েছিল তা তো আপনারা আমার ছবিতেই দেখতে পাবেন। এই দেখুন।
আমার চোখের নিচের ফোলা ভাব, ভাঁজ, এবং সূক্ষ্ম রেখাগুলো সব চলে গেছিল! আমার মুখমণ্ডল থেকে 15টা বছর যেন উধাও হয়ে গেছিল! আমি হতবাক ও ভীত ছিলাম। আমার প্রসাধনবিদ শুধু হাসছিলেন, তিনি তার ক্লায়েন্টদের এই ধরনের প্রতিক্রিয়ায় অভ্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। এত ফলপ্রসূ একটা প্রোডাক্টের নামটা আমি তার থেক জানতে চেয়েছিলাম, আর তিনি বলেছিলেন সেটাকে Skin Whitening বলে। Skin Whitening.
তারপর যা হয়েছিল সেটা খুবই স্বাভাবিক, আমি বাংলাদেশে ফিরে এসেছিলাম, এবং আমার পরিবারের লোক থেকে শুরু করে আমার সব বন্ধুবান্ধবেরা আমার উপর প্রশ্নের বোমা নিক্ষেপ করা শুরু করেছিল। কী ঘটেছিল সে ব্যাপারে আমি খোলাখুলিভাবে সবাইকে বলেছিলাম, কিন্তু ভিতরে-ভিতরে আমি বিষণ্ন ছিলাম। সকলে সত্যিই ভীষণ আনন্দ পেয়েছিল, কিন্তু আমি আমার মায়ের চোখে বিষাদের ছায়া দেখেছিলাম। কী ঘটেছে আমি বুঝতে পেরেছিলাম। একজন মহিলা শেষ অবধি মহিলাই, যত দিন সে বাঁচে- আর আমার মা-ও আমার মতোই সুন্দরী হতে চাইছিলেন। কিন্তু আমি 71 বছর বয়সী একজন মহিলাকে একা তিউনিশিয়ায় পাঠাতে চাইনি। আমি আমার শহরের বিভিন্ন দোকানে ওই বড়িটার খোঁজ করলাম, কিন্তু কেউ তার নামই শোনেনি...
এমন মনে হচ্ছিল যেন আপনি যে কোন জায়গা থেকেই বড়িটা অর্ডার করতে পারেন
মাস ছয়েক এইভাবেই কেটে গেল, আর তারপর হঠাৎ করেই একটা অলৌকিক ব্যাপার ঘটে গেল! ইন্টানেট ঘাঁটতে-ঘাঁটতে আমি অতি পরিচিত একটা নামে এসে হোঁচট খেলাম- নামটা ছিল Skin Whitening! Skin Whitening! আমি পরীক্ষা করে দেখলাম, সব ঠিকঠাকই ছিল। প্যাকেজিংটা কিছুটা আলাদা ছিল যেরকম আমি তিউনিশিয়ায় দেখেছিলাম তার থেকে, কিন্তু দামও অনেকটাই কম ছিল। এমনটা কি হতে পারে যে তিউনিশিয়ায় আমার থেকে বেশি নেওয়া হয়েছিল বাড়িতে পরিষেবাগুলো দেবার কারণে? প্রসঙ্গে ফিরে আসি, আমার কিছুটা সন্দেহ থেকেই গেল, কিন্তু তা সত্ত্বেও আমি সেটা অর্ডার করলাম! এটা কতটা কার্যকরী তা আমি জানতাম, আর আমি যদি আসলটার সন্ধান পেয়ে থাকি তাহলে সেটা আমার হাত ছাড়া করা উচিৎ নয়! প্যাকেজটা 5 দিনের মধ্যে আমার হাতে এসেছিল।
আমি আর আমার মা একসঙ্গে কোর্স শুরু করেছিলাম। ওটা কীভাবে করতে হয় তার সবটাই আমার জানা ছিল। নিঃসন্দেরে আমরা তিউনিশিয়ার সেই অসাধারণ স্পায়ের বিলাসবহুল চেয়ার আর সুগন্ধকে মিস করছিলাম, কিন্তু Skin Whitening তার কাজটা করেই যাচ্ছিল। Skin Whitening আমার মা মাত্র 12 দিনেই তার মুখমণ্ডল থেকে 15টা বছর মুছে ফেলতে পেরেছিলেন। প্রতিদিনের হিসেবে তা দিন প্রতি এক বছর করে ছিল।
এই হল আমার পরিশ্রমের ফল:
আমি সঙ্গে-সঙ্গে বড়িের আরও 6টা টিউবের অর্ডার দিয়েছিলাম- আমার মায়ের জন্য, আমার বন্ধুর জন্য এবং আমার নিজের জন্য। আমার হাতে যেহেতু এখনও ওর চেয়ে ভাল ত্বক পরিচর্যার কোন প্রোডাক্ট নেই, তাই ওটা আমার খুব কাজে লাগবে। ফলাফলটা সত্যই খুব দ্রুত এসেছিল। এটা সত্যিই অসাধারণ!
তাহলে এই ছিল আমার কাহিনী। আমি সত্যিই আশা রাখি যে আমার কাহিনী অনেক লোকেরই উপকারে আসবে। মেয়েদের সবসময়েই ঝলমেল লাগা উচিৎ, তাদের বয়স নির্বিশেষে!
মন্তব্যসমূহ